- স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে নৌকায় ভোট দিন,,,,,শোভন - March 26, 2023
- মহান স্বাধীনতা দিবসে সরিষাবাড়ী - March 26, 2023
- বি এনপির উদ্ধোগে বিশাল র্যালি নিয়ে ধনবাড়ী জাতীয় শহীদ মিনারে পূস্পস্তবক অর্পন - March 26, 2023

হাফেজ শাহ্ মুহাঃ মিজানুর রহমান তালুকদার হারুন
শবেবরাত পালন/মর্যাদা সম্পর্কে কুরআনে একটি অক্ষরনেই, কোন বিশুদ্ধ হাদীসও নেই। তাই এনিয়ে চাঁপাবাজী, বাড়াবাড়ি, হারা-জিতি শরীয়াহ পরিপন্থি আমল ও ধর্মীয় ফিতনা এবং বেদআতিকর্ম কোন মুসলিমের কাম্যনয়/হতে পাড়েনা। এনিয়ে দলীল ভিত্তিক পর্যালোচনা মূলক আমার অসংখ্য লেখা বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে।
আজকের পর্ব বাংলা ভাষাবাসিদের জন্য সোজা বাংলা আলোচনা পড়ুন, বুঝুন, যাচাই-বাঁচাই করুন, অতঃপর নিজদের আমলী জীবন গড়ুন মহান রবের সন্তুষ্টির জন্য এটাই হলো আমার নিবেদন।
ইসলামে ইতিহাসে, এমনকি আমাদের প্রিয় নাবী ও রাসূল মুহাম্মাদ সাঃ দুনিয়ার তথা নবুয়তী জীবনে শবেবরাত নামে কোন ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত ছিল বলে খুলা-মেলা সহী, হাসান, এমনকি যয়ীফ তথ্য সূত্রে বর্ণীত গ্রহন যোগ্য কোন বাণী আমাদের পর্যন্ত পৌছেনি। তবে হাঁ, এমাসে তিনি নফল সলাত ও সীয়াম অনেকবেশি করেছেনবলে প্রমানিত।
এমনকি প্রসিদ্ধ সাহাবীদের আমলী জীবন ও বাণী থেকেও শবেবারাতের আনুষ্ঠানিকতার কিছু প্রমান মিলেনা।
প্রমানিত নেই কোন উসুল বা ফীকহের ইমামের আমলী ডায়রী ও গ্রন্থে।
তবে কেন, এনিয়ে এত বাড়াবাড়ি ও ভাওতাবাজী এবং ভোয়া ইবাদত সাজানি ও আশ্বাসের ছড়াছড়ি? এই আমল সেই আমল ও ফয়েজ এবং সাওয়াবনিয়ে তর্কাতর্কি?
এক কথায় উৎসহীন, মনগড়া/দলীল বিহীন ইবাদতের জায়গা ইসলাম নয়।
যেটুকু রাসূল সাঃ ও তাহার সঙ্গিদের কাছ থেকে বিশ্বস্থ সূত্রে জানেন তা সবাই গুরুত্ব সহকারে মানেন এটাই শরীয়াহ।
তাতে কেহ আপত্তি করবেনা, কারো বিধি নিষেধ চলবেনা, বরং একজন মুসলমান হিসাবে এটা মানা আবশ্যিক।
প্রচলিত শবেবরাত সম্পর্কে কোন বিধিবিধান বা অনুষ্ঠান সুচি মুসলিম মিল্লাতে সমর্তীত নয়, তবে হাঁ ,’ ليلة النصف من شعبان, ‘ সম্পর্কে অনেক গুলো হাদীস আমাদের পর্যন্ত পৌছেছে, যার আমলিয়াত বা পালনীয়াত সম্পর্কে বা আনুষ্ঠানিকতার স্পষ্ট কোন দিকনির্দেশনা পাওয়া যায়না। এসকল বর্ণিত হাদীস কোনটাই নিরঙ্কুশ বিশুদ্ধবলে পরবর্তি হাদীসবিদগণ (আমাদের জন্য পূর্ববর্তি) সমসাময়ীক কোন ইমাম ও হাদীস বিশারদগণ মত প্রকাশ করেনাই। এ সম্পর্কে বর্ণীত ও প্রচারীত হাদীস গুলোর মধ্যে জাল-ভেজাল, যয়ীফ, ও বিতর্কিত হাদীসেই বেশি পরিলক্ষীত হয়।
তাই এগুলো কোন ধর্মীয় রেওয়াজ বা ইবাদত চালু করার জন্য যতেষ্ট বলে তারা মনে করেননি, আমরাও না।
রাসূল মুহাম্মাদ সাঃ, সাহাবায়ে কেরাম রাঃ ও পর্ববর্তিরা যা ভাল ও সয়াবের কাজ মনে করেননাই সেগুলোকে সয়াব মনে করে পালন করা কি ইসলামের দৃষ্টিতে বিদআত নয়?
আজকাল যারা আনুষ্ঠানিকভাবে এরজনী পালন করছেন, মসজিদে মসজিদে বিভিন্ন অনুষ্ঠান চালু করছেন, দরগা ও খানকায় বিশেষ ইবাদতের মহাউৎসবের আয়োজন করছেন তাকি সুন্নাহ? স্বয়ণ রাসূল মুহাম্মাদ সাঃ ও খোলাফায়ে রাসেদীন এসব করতো?
নিজবাড়ি ও অঞ্চলছেড়ে অন্য কোথাও গমনকরে বেশি নেকি/সয়াবের আশায় উচ্ছাসের সাথে পালন করছেন বা করাইছেন এটাকি শনীয়াহ সম্মত?
শরীযতি আমল/দীনি ইবাদৎ একটু বুঝেশুনে করেন।
শবেরাত বিষয়ে যেহেতু হাদীস শাস্রবিদ ও বিজ্ঞ উলামায়ে কেরাম রিতিমত দ্বীধা বিভক্ত আর সে প্রবাহই বর্তমান সময়ে পৌছেছে, তাই এ বিভক্তি আমাদের সমাজে চলমান। আর এতে পানি যোগাচ্ছেন এক শ্রেণী অর্ধ বা কিছু শিক্ষীত নামকা ওয়াস্তে আলেম, কথিত পির, স্বঘোষিত/ধর্মজীবী বুজুর্গ এবং একশ্রেণীর নিজস্ব মতালম্বি সুন্নিবাদিরা।মূলত সহী কোন ইবাদতে আজো কোন ধরণের বিতর্ক চালু হয়নি আল হামদুলিল্লাহ।
মনে রাখবেন ভুল ও পাপের কাজ যেই করুক সে পাপিষ্ট। শরীয়তে অনুমোধননেই এমন ইবাদত যেই চালু করুক সে গোমরা যাজক।
বিজ্ঞ আলেম-উলামাদের উচিৎ যথাসাদ্য এবিতর্ক থেকে জাতিকে মুক্তি দেওয়ার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহনকরা।
প্রতিবছর শবেবরাত আসলেই এনিয়ে চলে পক্ষে-বিপক্ষে দলীল চালাচালি, লেখা-লেখি ও বক্তব্য।
মূলত অমিমাংশিত কোন বিষয়ে মিমাংশা দিবারমত বা তাঁকে গ্রহন করারমত সেরকম কোন আস্তাশীল ব্যক্তি ও বুজোর্গ এবং ইসলামী স্কলার/বিশ্বস্ত আলেম বাংলাদেশে খুবেই কম, কিন্তু একবারে নেই এমনতো নয়। শতভাগ মুসলমান সমর্তনকরে ও ভালপাবে এমন চিন্তাভুল, এমন আলেম/নেতা দুনিয়াতে আছে বলে আমার দৃঢ় সন্দেহ কারণ মুসলমানরা প্রকৃত নেতৃত্ব বহু আগেই ত্যাগ করেছে। সন্দেহ সেরকম মুসলমানদের জন্যও কারণ, মুসলমানরাও এখন একমত ও পথের বিশ্বাসি নয় যদিও আমাদের স্পষ্টদাবি আমরা সবাই মুসলমান!
আফসোস্! আমরা বহু তরীকা/দলে বিভক্ত যা কুরআনে নিষিদ্ধ।
এমনটা বড়ই বেদনাদায়ক ও মুসলীম উম্মাহ দূর্বল হওয়ার স্পষ্ট কারণ এবং এ পন্থা ইসলাম পরিপন্থী।
সুতরাং, যেসকল বিজ্ঞজন নিজেকে প্রখ্যাত আলেম, বুজুর্গ, স্কলার, আল্লামা ইত্যাদি মনেকরেণ, তারা এবিষয়ে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে পথ চলবেন ও সাধারণ মুসলমানদের মোখ-মূখী হবেন।
এমন কোন বক্তৃতা বিবৃতি দিবেননা যা মানুষের সমস্যা বাড়িয়েদেয়। দয়া করে এমন মাছআলা ও ইবাদতের উৎসাহ বাণী প্রচার করবেননা যা স্পষ্ট বাড়াবাড়ি অথবা ছাড়াছাড়ি বলে লোক সমাজে প্রতিয়মান হয়।
আল্লাহ ও রাসূলের নামে, প্রতারণা মূলক কোন বাণী মুসলমানদের কাছে প্রচার বা প্রকাশ করবেননা। দীনের বিষয়ে অপব্যাখ্যা দিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করে গোমরাহীর দিকে ঢেলে দিবেননা।
সকল আমলী বিষয়ে যেসব হাদীস জাল বলে সাব্যস্ত হয়েছে তার দিকে এক চুল পরিমানও অগ্রসর হবেননা। সকল প্রকার যয়ীফ হাদীস থেকে নিরাপদে থাকা কতইনা উত্তম।
বিশুদ্ধ হাদীসবাদে, জাল-যয়ীফ হাদীস, এমুক বুজর্গ ও তমুক বুজর্গের কাহিনী বয়ান অহেতুক। এসব বয়ান করে মানুষকে ক্ষতিগ্রস্থের দিকে ধাবিত করবেননা, দয়াকরে এসব পরিহার করুন।
যেসব হাদীস বিভিন্ন কারণে যয়ীফ হিসাবে সাব্যস্ত হয়েছে, তাকে একবারে হাদীস নয় বলে এমন ঘোষণা দেওয়াও আমাদের জন্য ঠিকনয়। হাদীসকে হাদীস বলোন তবে কোন গ্যারেন্টি দিতে যায়েননা, মিথ্যা বা জাল হাদীস ব্যপারে সতর্কহোন, হাদীস নিয়ে বাড়াবাড়িতে লিপ্ত হবেননা।
ইচ্ছে হলে আপনি আমল করেণ নতুবা না করেণ।
কাউকে এসব হাদীসের উপর আমল করার জন্য অতী উৎসাহ দেওয়ারেই বা কি কারণ? দেখেননা, নাকি বুঝেননা? কত সহী হাদীস রয়ে যাচ্ছে আলেম ও আ’ম কেহ তার দ্বারে কাছেও যাননা। যত ভেজাল লাগান সব নফল মোস্তাহাবে! অথচ দীনি ইবাদতে কত ফরজ ওয়াজীব ও প্রকৃত সুন্নাত অবজ্ঞা-অবহেলায় নিমজ্জিত সেখানে কেন যাননা? অতএব, সবাই সাবধান হোন বিশেষকরে আলেম সমাজ। কারন, আপনার সহীহলে আমাদেরমতো সাধারণ মুসলমানের বড়ই কল্যাণ হবে।
কোনতেই শবেবরাতকে উপলক্ষ করে বানোয়াট কিছু আমদামী করবেননা। এতো সয়াব বিতরণ করতে যায়েননা, ভোয়া ফয়েজ, বারাকাত ও মাগফেরাত জানিয়ে মানুষকে এমন কোন মিথ্যা আশ্বাস দিবেননা যা আল্লাহ ও তার রাসুলের পক্ষ হতে দেওয়া হয়নি। শবেবরাতে পাপ-পূর্ণ, হায়াত-মওত ও রিযিকের বিষয় নিয়ে মানুষকে লোভ দেখিয়ে ধোকা দিবেননা। ভাল করে জেনে ও বুঝে মানুষকে নসিহত করবেন। এতে আপনার নিজের ও গণমানুষের কল্যাণ হবে, পরকালেও কোন বিপদে পড়ার সম্ভাবনা থাকবেনা। যে কোন দীনি আমল করা ও এব্যপারে উৎসাহ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পরিস্কার ধারণা অর্জন করাচাই।
কুরআন-সুন্নাহর বাহিরে মনগড়া ইবাদত চালু নাকরে বিশুদ্ধ ইবাদত ও আমলের প্রতি মানুষকে উৎসাহদিন।
আশাকরি আপনার, আমার ও সকলের দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণহবে।
কিছু বক্তার ভাষ্যমতে বলতেহয় যে, শবে বরাতের রাত্রে যদি আল্লাহ রিজিকদিত,তবে এরাত যারা হই-হুল্লা,উচ্ছাসকরে পালনকরে তাদের কারো অভাব-অভিযোগ থাকতোনা,তাদের কোন রোগ-ব্যধি ও দুনিয়াবী বালা-মচিবতে পড়তে হতোনা।
যারা পালন নাকরে এরা সবাই নাখেয়ে মরতো ও জাগতের তামাম সমস্যায় ওরাই পড়তো আর কোন কাফের মুশরেক দুনিয়ায় বাঁচতে পাড়তোনা অথচ বাস্তবে কি দেখাযায়?
মোদ্দাকথা মানবের জীবন-মরণসহ যাবতীয় কিছু পূর্ব নির্ধারিত আর সেটা পরিবর্তন যোগ্যনহে।
শবেবরাত সম্পর্কে প্রসিদ্ধ আলেমদের মতামত/আলোচনা থাকবে কমেন্ট বক্সে, সেগুলো দেখা ও শুনার অনুরুধ রইল।
খেদমত ও শুভ কামনায়ঃ
হাফেজ শাহ্ মুহাঃ মিজানুর রহমান হারুন তালুকদার
সভাপতি নান্দাইল সিটিজেন জার্ণালিষ্ট ক্লাব ও সিনিয়র সহ সভাপতি নান্দাইল ডিজিটাল প্রেসক্লাব।
নান্দাইল, ময়মনসিংহ তাং ৬/৩/২০২৩ইং।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.